কিন্তু দেশের বাইরে যাওয়াটা তো আর সহজ কম্ম নয়। কত কিছু লাগে। পাসপোর্ট, ভিসা ইত্যাদি। দেখি আমাদের মধ্যে ৩ জনেরই কোন পাসপোর্ট নেই। দে ছু্ট পাসপোর্ট অফিসে। পাসপোর্ট অফিসে যেয়ে সরকারী অফিস সম্পর্কে ধারনাই পাল্টে গেল। এত ভালে সেবা দিয়ে যাচ্ছে তারা ভাবনারই বাইরে। ১৫ দিনের পাসপোর্ট ১৩ দিনের মাথায় পেয়ে গেলে কেমন লাগে বুঝতেই পারছেন।
পাসপোর্ট পাওয়ার পর শুরু হলো ভিসা প্রসেসিং-এর কাজ করানো। যেহেতু সবাই ঠিক করলাম ভারত যাব কারন কাছেই আছে তাই ভারতীয় হাইকমিশনে দাড়ালাম ভিসার জন্য। সর্বোচ্চ ৪ দিন সময় লাগল পুরো ব্যপারটায়।
এরপর দিনক্ষণ হিসাব করতে লাগলাম কবে সেমিস্টার শেষ হবে। অবশেষে সেমিস্টারটা শেষ হতেই আর দেরী করলাম না। ২৮ ডিসেম্বর রওনা হলাম ভারতের উদ্দেশ্যে গ্রীন লাইনের ভলভো বাসে করে। রাত ১০:০০ টায় বাস ছাড়ার কথা। সময়ানুবর্তীতার এক দারুন নিদর্শন রেখে দেখি ঠিক দশটায়ই বাস ছাড়ল বেনাপোলের উদ্দেশ্যে। চলতি পথে উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যাপার নেই। তবে সবচেয়ে অবাক হলাম আরিচা ঘাটে আসার সময়। সব সময় যে আরিচার ভয়াবহ জ্যামের কথা শুনতাম তা কিন্তু একবারেই ছিলো না। পুরো ফাঁকা রাস্তা ছিল।
পাটুরিয়া ঘাটের ৫ নং ঘাট দিয়ে বীরশ্রষ্ঠ জাহাঙ্গীর ফেরী করে পার হলাম। পার হওয়ার পর দেখলাম পুলিশ কর্মকর্তার ঘুষ খাওয়ার দৃশ্য। যা দেখে মনে হলো দেশ সত্যিই ডিজিটাল হচ্ছে। যেহেতু এটি একটি ভ্রমন ডায়েরী তাই এখানে কোনো খারাপ খবর লিখব না এই প্রতিজ্ঞা করেই লিখতে বসলাম তাও এ দৃশ্য দেখে না লিখে পারলাম না।
সকাল ৭:০০ টা বাজল বেনাপোল পৌছতে। সেখান থেকে গ্রীন লাইন কর্তৃপক্ষেরই ভাড়া করা মাইক্রোতে করে গেলাম বর্ডারে। সেখান থেকে কাস্টমসের ঝামেলা সারতে লাগল আর মিনিট পনের। তারপরই ভারতের মাটি!
কাস্টমসের ঝামেলা শেষ করে ভারতে প্রবেশ করলাম। প্রথমেই নাস্তা সারলাম। বাংলাদেশের লুচি সাইজ এক একটা পরোটা!
একটা ব্যপার লক্ষ করলাম কোলকাতা বাসী খুব নিয়ম মেনে চলে। বিশেষ করে ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যাপারটা। একবার লাল বাতি জ্বলতেই কোনো গাড়ী থাকুক আর না থাকুক সব কি সুন্দর স্থির হয়ে দাড়িয়ে থাকে। আর সাথে সাথে ঐ পাশে রবীন্দ্র সঙ্গীত শুরু হয়ে যায়। পুরো ভারত সফরে যে ব্যপারটা আরও লক্ষ করলাম তা হলো তারা অনেক বেশী আলসে। দোকান খুলতে খুলতে বেলা ১২ টা বাজিয়ে ফেলে প্রায় আবার রাত ৯টার মধ্যেই সব হাওয়া। বন্ধুর দাদীর বাসায় উঠেই ফ্রেশ হয়ে নামলাম কোলকাতা অভিযানে। এদিন খুব কম সময়ই হাতে পেয়েছি। তারপরও ঘুরলাম পার্ক স্ট্রীট, ফেন্সী মার্কেট, খিদিরপুর আর বিগবাজার শপিং মল। প্রায় ১০ টা পর্যন্ত ঘুরে এই দিনের যাত্রা শেষ করলাম। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১:১৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



